আমরা সবাই জানি, স্বাস্থ্যের জন্য শাকসবজি ও ফল খাওয়া দরকার। কিন্তু, কাঁচা ছোলা নিয়ে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে। এটা কি সত্যিই স্বাস্থ্যকর? কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা, কাঁচা ছোলা খেলে ওজন বাড়ে, না কমে? আজকেই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করবো আর কাঁচা ছোলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ কতটুকু, সেটাও জানবো।
কাঁচা ছোলায় পুষ্টির সম্ভার
কাঁচা ছোলা পুষ্টির দিক থেকে অনন্য। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও মিনারেল পাওয়া যায়। এছাড়াও, এতে কম চর্বি এবং কোনো কোলেস্টেরল নেই। তাই, কাঁচা ছোলা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কাঁচা ছোলা খেলে কি ওজন বাড়ে?
এই প্রশ্নের সরল উত্তর হলো, হ্যাঁ ও না। কারণ, এটি নির্ভর করে আপনি কতটুকু খাচ্ছেন এবং আপনার সামগ্রিক ডায়েট কেমন।
ওজন বাড়তে চাইলে: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ক্যালোরি রয়েছে। নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে এবং সঠিক পরিমাণে ক্যালোরি গ্রহণ করলে ওজন বাড়ানো সম্ভব। তবে, এক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাওয়া উচিত নয়।
ওজন কমাতে চাইলে: কাঁচা ছোলায় প্রচুর ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এবং ক্ষুধা কমায়। ফলে, কম খেয়েও ক্ষুধার্ট অনুভূত হয় না। এছাড়াও, কাঁচা ছোলায় কম চর্বি থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে, কেবল কাঁচা ছোলা খেলেই ওজন কমবে না। স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও শরীরচর্চার সাথে এটি খেতে হবে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার সঠিক পরিমাণ কতটুকু?
কাঁচা ছোলা খাওয়ার পরিমাণ নির্ভর করে আপনার বয়স, ওজন, শারীরিক কার্যকলাপ ও স্বাস্থ্যগত অবস্থার উপর। সাধারণত, দিনে 30-50 গ্রাম কাঁচা ছোলা খাওয়া স্বাস্থ্যকর। তবে, প্রথমে কম পরিমাণে খাওয়া উচিত। শরীর অভ্যস্ত হয়ে গেলে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারিতা
কাঁচা ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। তবে কাঁচা ছোলা বেশি পরিমাণে খেলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
কাঁচা ছোলায় লেকটিন নামক একটি প্রোটিন থাকে যা হজমজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। লেকটিন পেট ফাঁপা, গ্যাস, বমি বমি ভাব, বমি এবং ডায়রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
কাঁচা ছোলায় ফাইটোঅ্যালেক্সিন নামক কিছু যৌগ থাকে যা অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কাঁচা ছোলা খেলে কারো কারো চুলকানি, ফুসকুড়ি, মুখ ফুলে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট বা অন্যান্য অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
কাঁচা ছোলায় অদ্রবণীয় আঁশ থাকে যা পেট ফাঁপা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যাদের ইতিমধ্যেই কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিত নয়।
কাঁচা ছোলায় কিছু বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। তাই কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারিতা এড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
- কাঁচা ছোলা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
- কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
- যাদের ইতিমধ্যেই হজমজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি বা কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের কাঁচা ছোলা খাওয়া উচিত নয়।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা পেতে এটি রান্না করে খাওয়া উচিত। রান্না করার ফলে লেকটিন এবং অদ্রবণীয় আঁশের পরিমাণ কমে যায়। এছাড়াও, রান্না করার ফলে ছোলা বেশি সহজে হজম হয়।
কাঁচা ছোলা খেলে কি মোটা হওয়া যায়
হ্যাঁ, কাঁচা ছোলা খেলে মোটা হওয়া সম্ভব। কাঁচা ছোলায় প্রায় ১০০ ক্যালরি থাকে প্রতি ১০০ গ্রামে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
কাঁচা ছোলায় থাকা প্রোটিন শরীরের পেশী গঠনে সাহায্য করে। পেশী গঠনের ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও, কাঁচা ছোলায় থাকা ফাইবার হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। হজমশক্তি বাড়ার ফলে শরীরের পুষ্টি উপাদানগুলো ভালোভাবে শোষিত হয়, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক।
তবে, কাঁচা ছোলা খেলে ওজন বাড়ার জন্য অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণে কাঁচা ছোলা খেলে পেটে অস্বস্তি, বমিভাব, এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
কাঁচা ছোলা খেলে ওজন বাড়াতে চাইলে প্রতিদিন ১০০-২০০ গ্রাম কাঁচা ছোলা খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, কাঁচা ছোলা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে। যেমন, কাঁচা ছোলা সালাদ, স্যান্ডউইচ, বা স্মুদির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।
কাঁচা ছোলা খেলে ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্য উপকারিতাও পাওয়া যায়। কাঁচা ছোলায় থাকা ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানগুলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা ছোলা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
কাঁচা ছোলা খেলে কি ওজন কমে
হ্যাঁ, কাঁচা ছোলা খেলে ওজন কমে। কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার থাকে। প্রোটিন আমাদের শরীরের পেশী গঠনে সাহায্য করে এবং ফাইবার আমাদের পাকস্থলী ভর্তি রাখে এবং খিদে কমায়। ফলে আমরা কম ক্যালোরি গ্রহণ করি এবং ওজন কমে।
কাঁচা ছোলায় থাকা ফাইবার আমাদের শরীরের হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। এতে করে আমাদের শরীরে পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে শোষিত হয় এবং শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায়। এছাড়াও, কাঁচা ছোলায় থাকা প্রোটিন আমাদের শরীরের বিপাক ক্রিয়ার হার বৃদ্ধি করে। ফলে আমরা আরও বেশি ক্যালোরি পোড়াতে পারি।
কাঁচা ছোলা খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে এমন কিছু গবেষণা রয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন 100 গ্রাম কাঁচা ছোলা খেয়েছেন, তারা যারা কাঁচা ছোলা খেয়নি তাদের তুলনায় গড়ে 2.2 পাউন্ড (1 কেজি) ওজন কমাতে পেরেছেন।
কাঁচা ছোলা ওজন কমাতে সাহায্য করে, তবে এটি খেতে হবে পরিমিত পরিমাণে। প্রতিদিন 100-150 গ্রাম কাঁচা ছোলা খাওয়া যেতে পারে। কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
কাঁচা ছোলা ছাড়াও, ওজন কমাতে সাহায্য করে এমন অন্যান্য খাবার হল:
- সবুজ শাকসবজি
- ফলমূল
- ডাল
- ওটস
- বাদাম
- বীজ
ওজন কমাতে হলে শুধুমাত্র খাবারের দিকে নজর দেওয়াই যথেষ্ট নয়। পাশাপাশি, নিয়মিত ব্যায়াম করাও জরুরি।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আঁশ, ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। কাঁচা ছোলা খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে, যেমন:
- হজমশক্তি বৃদ্ধি: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে আঁশ রয়েছে। আঁশ হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা ছোলায় থাকা দ্রবণীয় আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- শক্তি বৃদ্ধি: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। প্রোটিন শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। তাই কাঁচা ছোলা খেলে শরীরে শক্তির যোগান বাড়ে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ফাইবার রয়েছে। প্রোটিন এবং ফাইবার উভয়ই ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। তাই কাঁচা ছোলা খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা পাওয়া যায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রয়েছে। ভিটামিন এবং খনিজ উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই কাঁচা ছোলা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ: কাঁচা ছোলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার কিছু অপকারিতাও রয়েছে, যেমন:
- অ্যালার্জি: কিছু লোকের কাঁচা ছোলা খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলো হলো চোখ, নাক, মুখ, গলা এবং ত্বকে চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি।
- পেট ফাঁপা: কাঁচা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। ফাইবার হজম প্রক্রিয়া ধীর করে দেয়। তাই কাঁচা ছোলা খেলে পেট ফাঁপা হতে পারে।
- গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা: কাঁচা ছোলা খেলে কারো কারো গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা হতে পারে। যেমন, বমি বমি ভাব, বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি।
সাধারণত, সুস্থ ব্যক্তিরা প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ গ্রাম কাঁচা ছোলা খেতে পারেন। তবে, অ্যালার্জি বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা থাকলে কাঁচা ছোলা খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এতে ছোলার উপর থাকা ধুলোবালি এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ দূর হয়ে যায়। ছোলা ভিজিয়ে রাখলে হজম সহজ হয়। তাই খেতে যাওয়ার আগে ছোলা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে পারেন।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার অপকারিতা
কাঁচা ছোলা খাওয়ার কিছু অপকারিতা হল:
- বদহজম হতে পারে: কাঁচা ছোলায় ফাইবার বেশি থাকে, তাই এটি খেলে বদহজম হতে পারে। এটি পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং পেট ব্যথার কারণ হতে পারে।
- খাদ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে: কাঁচা ছোলায় বিষাক্ত উপাদান থাকতে পারে। তাই কাঁচা ছোলা ভালোভাবে ধুয়ে খাওয়া উচিত।
- অ্যালার্জি হতে পারে: কিছু লোকের কাঁচা ছোলার প্রতি অ্যালার্জি থাকতে পারে। এতে অ্যালার্জির উপসর্গ যেমন চুলকানি, ফুসকুড়ি, শ্বাসকষ্ট এবং বমি বমি ভাব হতে পারে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এতে থাকা বিষাক্ত উপাদান দূর হবে। ছোলা ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা। এতে ছোলায় থাকা ফাইবার নরম হয়ে যাবে এবং হজম করা সহজ হবে।
কাঁচা ছোলা সাধারণত সকালের নাস্তায় খাওয়া হয়। এছাড়াও, সালাদ, স্যুপ, তরকারি ইত্যাদিতে কাঁচা ছোলা যোগ করে খাওয়া যেতে পারে। যদি আপনার কাঁচা ছোলা খেলে বদহজম, অ্যালার্জি বা অন্য কোনো সমস্যা হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম
কাঁচা ছোলা খেতে খুবই উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। কাঁচা ছোলা খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়, হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার নিয়ম খুবই সহজ। নিম্নলিখিতভাবে কাঁচা ছোলা খেতে পারেন:
- প্রথমে পরিমাণমতো কাঁচা ছোলা নিন।
- ছোলা ভালো করে ধুয়ে নিন।
- ছোলা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন ৪-৬ ঘন্টা।
- ছোলা ভিজিয়ে রাখার পর, পানি ঝরিয়ে নিন।
- ছোলা স্বাদমতো লবণ, মরিচ, আদা, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে মেখে নিন।
- এবার ছোলা পরিবেশন করুন।
কাঁচা ছোলা খেলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
- ছোলা দীর্ঘক্ষণ ভিজিয়ে রাখবেন না। এতে ছোলায় থাকা ফাইটিক অ্যাসিড বাধাগ্রস্ত হয় এবং শরীর থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
- ছোলা বেশি পরিমাণে খেলে পেটের সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
- ছোলা খেলে সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে ছোলার ফাইবার হজম করা সহজ হয়।
কাঁচা ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার। নিয়মিত কাঁচা ছোলা খেলে শরীর সুস্থ থাকে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার পরিমান
কাঁচা ছোলা একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ। কাঁচা ছোলা খেলে অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। তবে, কাঁচা ছোলা খাওয়ার পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত। কারণ, এতে ফাইবার বেশি থাকায় বেশি খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন ২৫-৩০ গ্রাম কাঁচা ছোলা খাওয়া যেতে পারে। তবে, যারা নতুন করে কাঁচা ছোলা খাওয়া শুরু করছেন, তাদের প্রথমে অল্প পরিমাণে খেয়ে দেখতে হবে। যদি কোনো সমস্যা না হয়, তাহলে ধীরে ধীরে পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। এতে ছোলার উপর থাকা ধুলোবালি এবং জীবাণু দূর হয়ে যাবে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার কিছু উপকারিতা হল:
- শরীরে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- হজমশক্তি বাড়ায়।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
কাঁচা ছোলা খাওয়ার কিছু সতর্কতা হল:
- বেশি খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং ডায়রিয়া হতে পারে।
- যারা গ্যাস্ট্রিক বা আলসারের সমস্যায় ভুগছেন, তারা কাঁচা ছোলা এড়িয়ে চলবেন।
- যারা কিডনি রোগে ভুগছেন, তারা কাঁচা ছোলা খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।
সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার নিয়ম
সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। ছোলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ওজন কমাতে, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে, কোলেস্টেরল কমাতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
সকালে খালি পেটে ছোলা খাওয়ার নিয়ম হলো:
- রাতে ১ কাপ ছোলা পরিষ্কার করে ধুয়ে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- সকালে ছোলা পানি ঝরিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
- ছোলা খেয়ে সাথে আদা কুচি, কাঁচা মরিচ এবং লেবুর রস খেতে পারেন।
ছোলা খাওয়ার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
- ছোলা খেয়ে সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন।
- ছোলা সেদ্ধ করে খেলে হজম করা সহজ হয়।
- ছোলা বেশি খেলে পেটে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে।
সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে শরীরে যেসব উপকারিতা হয়:
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- হার্টের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
- কোলেস্টেরল কমে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
সুতরাং, সকালে খালি পেটে ছোলা খেলে শরীরের জন্য অনেক উপকার হয়। তাই নিয়মিত সকালে খালি পেটে ছোলা খেতে পারেন।
প্রতিদিন ছোলা খেলে কি হয়
প্রতিদিন ছোলা খেলে অনেক উপকার হয়। ছোলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের বিভিন্ন কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয়।
- প্রোটিন: ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংসের সমান। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ১৭ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন শরীরের গঠন ও মেরামতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ফাইবার: ছোলায় ফাইবারের পরিমাণও বেশি। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ১১ গ্রাম ফাইবার থাকে। ফাইবার হজমশক্তি উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
- ভিটামিন ও খনিজ: ছোলায় ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয়।
প্রতিদিন ছোলা খেলে যেসব উপকার হয় সেগুলো হলো:
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- হৃদরোগ, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগের ঝুঁকি কমে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- হজমশক্তি উন্নত হয়।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- শরীরে শক্তির যোগান দেয়।
তবে, ছোলা খেলে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। ছোলা রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। কারণ, ছোলায় কিছু বিষক্রিয়া সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। ছোলা বেশি খেলে গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা, বদহজম ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে ছোলা খাওয়া উচিত।
প্রতিদিন ৫০-৬০ গ্রাম ছোলা খাওয়া যেতে পারে। ছোলা রান্না করে, ভাজা করে, সালাদ হিসেবে বা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।