২০২৪ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার | ২০২৪ সালের রমজান কত তারিখ | ২০২৪ সালের রোজার ক্যালেন্ডার

রমজান মাস মুসলিমদের জন্য খুবই পবিত্র একটি মাস রমজান মাসের সমস্ত মুসলিম জাতি রোজা রাখে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য। রমজান মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে ২৯ অথবা ত্রিশ দিনে হয়ে থাকে যা নির্ভরযোগ্য হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। ২০২৪ সালের রোজার ক্যালেন্ডার নিয়ে। রমজান মাস হল মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতের মাস।
২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার
এই মাসে সকল মুসলিম জাতি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রমজান পালন করে থাকে। তাই অনেকেই ২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার দেখতে চাই। যে কত তারিখে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। এ মাসে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক মুসলিম ব্যক্তির উপর সাওম পালন ফরয, কিন্তু অসুস্থ, গর্ভবতী, ডায়বেটিক রোগী, ঋতুবর্তী নারীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হয়েছে। রোজা বা সাওম হল সুবহে সাদিক থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার, পঞ্চইন্দ্রিয়ের দ্বারা গুনাহের কাজ এবং (স্বামী-স্ত্রীর ক্ষেত্রে) যৌনসংগম থেকে বিরত থাকা।

২০২৪ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার (আরবি)

আরবি মাসের প্রতিটি মাস চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে। একইভাবে রমজান মাস এবং চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে শুরু হয়। ১৪৪৪ হিজরির প্রথম রমজান শুরু হবে ২৩ মার্চ ২০২৪ (চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে)। রমজান ক্যালেন্ডার ২০২৩ নীচে দেওয়া হল।
২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার (আরবি)
২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার (আরবি)

২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি)

যেহেতু রমজান মাস বা আরবি মাস গুলোর চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ২২ তারিখ রাত্রে আকাশে চাঁদ দেখা গেলে ২৩ তারিখ (২৩ তারিখ ভোরে সাহারি খেতে হবে) থেকে রোজা শুরু হয়ে যাবে। ২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার দেওয়া হল। নিচের চিত্রে ২০২৩ সালের রমজানের ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি) দেওয়া হল।
২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি)
২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি)

২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি)
২০২৩ সালের রোজার ক্যালেন্ডার (বাংলা ও ইংরেজি)

রমজান মাসের দোয়া ও আমল

রোজার নিয়ত

রোজার নিয়ত করা আবশ্যক। রোজার নিয়ত না করলে রোজা হবে না। ভোর রাতে সাহরি খেয়ে মুমিন মুসলমান রোজার নিয়ত করেন। বহু প্রচলিত রোজার একটি নিয়ত রয়েছে। তাহলো-

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন আছুমা গাদান মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আংতাস সামিউল আলিম।’

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল তোমার পক্ষ থেকে পবিত্র রমজানের নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া

রোজার দিন বেশি বেশি ইসতেগফার পড়া। বিশেষ করে ইফতারের আগে আগে বেশি বেশি ইসতেগফার, দরূদ ও দোয়া পড়া।

– اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم

উচ্চারণ: আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।

– اَلْحَمْدُ للهِ اَللّهُمَّ إنِّيْ أسْئَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْئٍ أنْ تَغْفِرَلِيْ

উচ্চারণ: ‘আলহামদুলিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিরাহমাতিকাল্লাতি ওয়াসিআত কুল্লা শাইয়িন আন তাগফিরলি।’

অর্থ: ‘সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য; হে আল্লাহ! আমি তোমার দরবারে তোমার সর্ববেষ্টিত রহমতের উসিলায় প্রার্থনা করছি, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।’ (ইবনে মাজাহ)

ইফতারের দোয়া

ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরুতে বলা,

– بِسْمِ الله বিসমিল্লাহ বলা।

তারপর এ দোয়া পড়ে ইফতার শুরু করতেন বিশ্বনবি-
হজরত মুয়াজ ইবনে যুহরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন, তখন এ দোয়া পড়তেন-
أللّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَعَلى رِزْقِكَ أفْطَرْتُ.
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আলা রিযক্বিকা আফত্বারতু।’

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্যে রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিযিক দ্বারা ইফতার করছি। (আবু দাউদ মুরসাল, মিশকাত)

ইফতার করার পর বিশ্বনবির দোয়া

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন-

ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ

উচ্চারণ: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’

অর্থ: ‘ (ইফতারের মাধ্যমে) পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াব ও স্থির হলো ‘ (আবু দাউদ, মিশকাত)

কারো ঘরে মেহমান হয়ে ইফতার করলে এ দোয়া পড়া-

أَكَلَ طَعَامَكُمُ الْأَبْرَارُ، وَصَلَّتْ عَلَيْكُمُ الْمَلَائِكَةُ، وَأَفْطَرَ عِنْدَكُمُ الصَّائِمُونَ

উচ্চারণ: আকালা ত্বাআমাকুমুল আবরারু, ওয়া সাল্লাত আলাইকুমুল মালায়িকাতু, ওয়া আফত্বারা ইংদাকুমুস সায়িমুন।’ (আবু দাউদ)

তারাবিহ নামাজের নিয়ত

রমজান এলেই অনেকে তারাবিহ নামাজের নিয়ত খুঁজতে থাকে। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। নিয়ত হলো নামাজ পড়ার জন্য মনের ইচ্ছা বা সংকল্প। এ ইচ্ছা বা সংকল্প আরবি কিংবা বাংলায় করা যায়। দুই দুই রাকাআতে তারাবিহ নামাজ আদায় করতে হয়। তাই এভাবে নিয়ত করা-

‘তারাবিহ-এর দুই রাকাআত নামাজ ক্বেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য (জামাআত হলে- এ ইমামের পেছনে) পড়ছি- (اَللهُ اَكْبَر) আল্লাহু আকবার।

তারাবিহ নামাজের দোয়া

তারাবিহ নামাজের ৪ রাকাআত পর পর অনেকে একটি বহুল প্রচলিত দোয়া পড়ে থাকেন। যার অর্থও অনেক সুন্দর। তাহলো-

سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ

উচ্চারণ: ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’

 

তারাবিহ নামাজের মুনাজাত

اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ – اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’

রমজানজুড়ে বেশি পঠিত দোয়া

রমজান জুড়ে বিশ্বনবির এ দোয়াগুলো বেশি বেশি করা জরুরি। আর তাহলো-

– اَﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ اﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আ’ন্নি। 

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’

Scroll to Top